ফরেনসিক দলের আগেই অকুস্থলে কেন পৌঁছাতে হল মন্ত্রীমশাইকে, প্রশ্ন অনির্বাণের
- By : Anirban Ganguly
- Category : In News
সুমন বটব্যাল, কলকাতা: ‘‘দু’দিন আগেই তো উনি বলেছিলেন, একটু আধটু অশান্তি না হলে পুলিশ. আদালতের প্রয়োজন থাকবে কি করে? সেই মন্ত্রীমশাইকে (ফিরহাদ হাকিম) কেন ফরেনসিক দলের আগেই পড়িমরি করে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে হল?’’ রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ডে এমনই বিস্ফোরক প্রশ্ন সামনে আনলেন বিজেপির অন্যতম থিঙ্কট্যাঙ্ক অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়৷ জবাবটাও দিলেন নিজেই৷ বললেন, ‘‘দলের কোন্দল হ্যান্ডেল করার জন্যই এবং পরিস্থিতি ম্যানেজ দেওয়ার জন্যই আগেভাগে অকুস্থলে পৌঁছে গেলেন ফিরহাদ৷’’
ইতিমধ্যে রামপুরহাট থানার ওসি এবং এসডিপিও-র বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য৷ নবান্নের তরফে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের সিট৷ যদিও সবটাই ‘আইওয়াশ’ দাবি করে অনির্বাণ বলেন, ‘‘সিটের চেহারা তো আমরা দেখলাম আনিস কাণ্ডে৷ এক্ষেত্রেও তেমনটাই হবে৷ নামেই তদন্ত৷ আসলে আগে থেকেই সব ঠিক করা আছে!’’
২০০০ সালের ২৭ জুলাই৷ বীরভূম জেলার নানুর থানা এলাকার সূচপুরে এগারো জন ভূমিহীন ক্ষেতমজুরকে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছিল তৎকালীন শাসক সিপিএমের বিরুদ্ধে৷ পরের বছরের ৪ জানুয়ারি আরেকটি গণহত্যা হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা থানা এলাকার ছোট আঙারিয়া গ্রামে৷ দুটি ঘটনাতেই সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেই প্রসঙ্গ টেনেই অনির্বাণের প্রশ্ন, ‘‘তখন কথায় কথায় সিবিআই তদন্তের কথা বলতেন৷ আর এখন উনি সিবিআইকে ভয় পান৷ কথায় কথায় সিট গঠন করে ফেলেন৷ কেন? এর থেকেই তো স্পষ্ট, তদন্তকে নিরপেক্ষ না রেখে পার্টি লাইনে পরিচালনা করার জন্যই এই পদক্ষেপ৷’’
বস্তুত, গণহত্যা কাণ্ডের প্রসঙ্গে অনুব্রতের দেওয়া শর্ট সার্কিটের ব্যাখ্যাকে তীব্র কটাক্ষ করে অনির্বাণ বলেন, ‘‘আসলে অনুব্রতের মাথায় শর্ট সার্কিট হয়েছে। যে কেউ দেখলে বলবে, এটা গণহত্যা৷ পুড়িয়ে মারা হয়েছে৷ সন্ত্রাসের আতুঁড়ঘরের রাজা অনুব্রত৷ উনি সবটা জানেন, ওনার অঙ্গুলিহেলন ছাড়া বীরভূমে কিছু হতে পারে না৷ ভাদু শেখ কেন মারা গেল জানা দরকার৷ কারণ, এমনও হতে পারে, ভাদু এমন কিছু জেনে ফেলেছিলেন তাই বোধহয় ওকে সরিয়ে দেওয়া হল৷’’
কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, ফিরহাদের দেওয়া ‘বাংলাকে বদনাম করার চক্রান্তের’ তথ্য প্রসঙ্গেও৷ কটাক্ষের সুরে বলেছেন, ‘‘বাংলাকে বদনাম করার জন্য শাসকদলই যথেষ্ঠ৷ কারণ, ওদের পার্টিটা চলছে লুঠে নেওয়ার, তোলাবাজি এবং বালি থেকে কয়লা পাচারের ইন্টারেস্টের মাধ্যমে৷ খুচরো নেতা থেকে রাঘব বোয়াল৷ সবাই থাবা বসাচ্ছে পদ আর টাকার জন্য৷ তারই জেরে দিকে দিকে অন্তর্কলহ, গোষ্ঠী দ্বন্দে জর্জরিত দলটা৷ ফলে বাংলার আইনি ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের পক্ষে ক্রমেই বিপদের হয়ে উঠছে৷ যার নিট ফল, বাংলার পরিস্থিতি ক্রমেই রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগোচ্ছে৷ কারণ, পুলিশ মন্ত্রীর ব্যর্থতাই বাংলায় পুলিশের পেশাদারিত্ব হারিয়ে যাচ্ছে৷’’